বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার পল্লী এলাকায় ছাগলে পেপে গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সাবালের আঘাতে সোহেল (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এতে আহত হয় আরও চারজন। আহতরা হলেন, মাওলানা ফয়জুর রহমান সুরুজ, দেলোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম,হাফিজুর রহমান।
এ ঘটনায় নিহত সোহেলের বড় ভাই মাওলানা ফয়জুর রহমান সুরুজ বাদি হয়ে মুক্তাগাছা থানায় আঃ সামাদ বাদলকে প্রধান আসামিসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৪/৫ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন, মকবুল হোসেন, তার তিন ছেলে আব্দুস সামাদ বাদল, মাসুদ ও বাবুল, হোসনে আরা স্বামী আব্দুস সামাদ বাদল।
রবিবার (২৮ জুন) দুপুরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার খেরুয়াজানি ইউনিয়নের ঘরবাজাইল গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। গ্রামটিতে আতংকাবস্থা বিরাজ করছে। হত্যাকান্ডের পর থেকেই আসামিরা বাড়িঘর ছেলে পলাতক বলে গ্রামবাসী জানায়।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার প্রতিবেশী বাদলের একটি পেঁপে গাছ খায় সোহেলের ছাগল। পরে ওই ছাগলেকে বাদলের স্ত্রী খোয়ারে দিয়ে আসে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শুক্রবারের কথা কাটাকাটির জেরে শনিবার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে সোহেলসহ তার পরিবারের ৫ জনকে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত করে। পরেরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেল মৃত্যু বরণ করে।
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসা নিহত সোহেলের বড় ভাই মাওলানা ফয়জুর রহমান সুরুজ বলেন, বাদলের পরিবারটি এই গ্রামে সব সময়েই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে থাকে। তুচ্ছ একটি ঘটনাকে নিয়ে আজ আমার ভাইকে তারা খুন করে ফেলেছে।
তিনি এ হত্যাকান্ডের তদন্তপূর্ক সঠিক বিচার দাবি করে বলেন, বাদল ও তার স্ত্রী শুক্রবার বাকবিতন্ডার সময়ই সোহেলকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে সোহেল মুক্তাগাছা থানায় জিডি করতে বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তায় বাদল,তার স্ত্রীসহ লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। সোহেলের মাথায় সাবাল দিয়ে আঘাত করে তাকে গুরতর আহত করে। পরে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ কাউসার আলী বলেন, আমি ঘাস কাটছিলাম দেখলাম কিছু লোক সাবাল, কোচ, রামদা নিয়ে সোহেলসহ তার ভাইকে মারছে। আমি আসতে আসতে সোহেল মাটিতে পড়ে গেল। তার শরীর দিয়ে রক্ত পড়ছে। এসময় আমি বাদল ও সোহেলের ভাইদের দুই দিকে সড়িয়ে দেই। পরে এলাকাবাসীদের সহায়তায় সোহেলসহ আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেলের মৃত্যু হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, ছাগল পেঁপে গাছ খেয়েছে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হয়। এনিয়ে মারামারির এক পর্যায়ে একজন খুন হয়েছে। এঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামি বাদলের পিতা মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।